কিভাবে বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত দূর করা যায়?

 

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত দূর করতে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে এর আগে নিশ্চিত হওয়া দরকার যে সমস্যা কতটা গুরুতর এবং শিশুর বয়স অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। নিচে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:


১. নবজাতক (৬ মাসের কম বয়সী)

এবয়সের শিশুরা সাধারণত মায়ের দুধ বা ফর্মুলা দুধ পান করে এবং এদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুব কম হয়। তবে সমস্যার ক্ষেত্রে করণীয়:

  • মায়ের দুধ: মায়ের দুধই সেরা। এটি হজম সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
  • ফর্মুলা দুধ: ফর্মুলা সঠিকভাবে মিশ্রিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। বেশি ঘন বা পাতলা ফর্মুলা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
  • গ্যাসের ম্যাসাজ: শিশুর পেটে হালকা করে ঘড়ির কাঁটার দিকে ম্যাসাজ করুন।
  • পায়ের ব্যায়াম: শিশুকে চিত করে শুইয়ে পা সাইকেল চালানোর মতো নাড়াচাড়া করুন।

২. ৬ মাস বা তার বেশি বয়সী (যারা সলিড খাবার খায়)

এ বয়সে কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত দূর করতে নিচের উপায়গুলো ব্যবহার করতে পারেন:

  • তরল খাবার দিন:
    • ফলের রস: নাশপাতি, প্রুন, বা আপেলের রস।
    • গরম পানি বা হালকা স্যুপ।
  • আঁশযুক্ত খাবার যোগ করুন:
    • মিষ্টি কুমড়োর পিউরি, পালং শাক, গাজর।
    • পাকা পেঁপে বা নাশপাতি।
  • শুকনো ফল ব্যবহার করুন:
    • ভেজানো কিশমিশ বা প্রুন গুঁড়ো করে খাওয়ান।
  • পেটের ম্যাসাজ: হালকা গরম কাপড় দিয়ে পেটে চেপে রাখুন এবং ম্যাসাজ করুন।

৩. বড় বাচ্চা (১ বছর বা তার বেশি)

  • আঁশযুক্ত খাবার বাড়ান: শাকসবজি, ওটমিল, ব্রাউন রাইস, এবং ডাল।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করান: শিশুকে দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করান।
  • প্রোবায়োটিক খাবার: দই বা প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
  • শারীরিক সক্রিয়তা: শিশুকে খেলাধুলা বা হাঁটাচলার সুযোগ দিন, যা অন্ত্রের গতি উন্নত করতে সাহায্য করে।

৪. ঘরোয়া করণীয় দ্রুত সমাধানের জন্য

  • গ্লিসারিন সাপোজিটরি (Glycerin Suppository): চিকিৎসকের পরামর্শে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি দ্রুত পায়খানা করতে সাহায্য করে।
  • জলপাই তেল বা নারকেল তেল: চিকিৎসকের পরামর্শে সামান্য পরিমাণ তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

কিছু সতর্কতা:

  1. ওষুধ নিজে থেকে দেবেন না: ল্যাক্সেটিভ বা অন্য ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দেবেন না।
  2. খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন: সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাবার দিন।
  3. সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে: ৭ দিনের বেশি সময় ধরে পায়খানা না হলে বা বাচ্চার পেট ফুলে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

শিশুর খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন রুটিনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনলেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান সম্ভব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url