শিশুর পাতলা পায়খানা হলে কি ঔষধ খেতে হবে?
শিশুর পাতলা পায়খানা (ডায়রিয়া) হলে তা সাধারণত ভাইরাল সংক্রমণ, খাবারের অ্যালার্জি, বা নতুন খাবার হজমে সমস্যা থেকে হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ঘরোয়া যত্ন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে সামাল দেওয়া যায়। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
প্রথমিক পদক্ষেপ:
-
শরীরের পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) প্রতিরোধ করুন:
- শিশুকে বেশি বেশি ওআরএস (ORS) দিন। এটি পানির ভারসাম্য বজায় রাখে।
- মায়ের দুধ বা ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যান।
-
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন:
- ৬ মাসের কম বয়সী: শুধু মায়ের দুধ বা ফর্মুলা দুধ খাওয়ান।
- ৬ মাস বা তার বেশি বয়সী: সহজপাচ্য খাবার দিন, যেমন— ভাতের মাড়, গাজরের স্যুপ, কলার পেস্ট।
যখন ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে:
পাতলা পায়খানা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা শিশুর অবস্থা গুরুতর মনে হয়, তখন চিকিৎসকের পরামর্শে নিচের ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে:
-
জিঙ্ক সিরাপ:
- ডায়রিয়ার জন্য জিঙ্ক খুবই কার্যকর। এটি অন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
- ডোজ: চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী ১০-১৪ দিন।
-
প্রোবায়োটিক:
- অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।
- চিকিৎসক যদি প্রোবায়োটিক ড্রপ বা সিরাপ দিতে বলেন, তবে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
-
যদি সংক্রমণ হয়:
- চিকিৎসক যদি মনে করেন ডায়রিয়ার কারণ ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।
- নিজে থেকে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন না।
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি যদি:
- পাতলা পায়খানা ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ না হয়।
- শিশুর পেশাব কমে যায় বা ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
- পায়খানায় রক্ত বা শ্লেষ্মা দেখা যায়।
- শিশুর পেট ফুলে যায় বা জ্বর থাকে।
- শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
কিছু ঘরোয়া যত্ন:
- শিশুর আশেপাশের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করুন।
- পাতলা পায়খানা হলে শিশুকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।
- পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করুন।
পাতলা পায়খানা সাধারণত নিজে থেকে সেরে যায়। তবে, গুরুতর হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ ব্যবহার করবেন না। শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে সঠিক যত্ন এবং পর্যাপ্ত তরল প্রদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।