এলার্জী থেকে পুরোপুরি আরোগ্য লাভের কোন উপায় আছে কী ?
এলার্জি পুরোপুরি নিরাময় করা কঠিন, তবে কিছু ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করলে এলার্জির লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং আরাম পাওয়া সম্ভব। এলার্জি সাধারণত একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা সংক্রান্ত সমস্যা, যা নির্দিষ্ট খাবার, ধূলা, পরাগ, পোষা প্রাণীর লোম, বা ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া করার ফলে সৃষ্টি হয়। এলার্জির লক্ষণগুলো দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু পদক্ষেপ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো:
এলার্জি থেকে মুক্তির জন্য করণীয়:
এলার্জির কারণ শনাক্ত করা: প্রথম ধাপ হল, কোন জিনিসটি আপনার এলার্জির কারণ তা নির্ণয় করা। এটি জানা গেলে সেই বস্তু বা পরিবেশ এড়িয়ে চলা সহজ হবে। স্কিন টেস্ট বা ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে চিকিৎসক আপনার এলার্জির কারণ চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারেন।
পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ: ধূলা, পোষা প্রাণী, এবং মোল্ড (ছত্রাক) এলার্জির সাধারণ কারণ। নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখা, বেডশীট ও কার্পেট পরিষ্কার রাখা, এবং পরাগ মৌসুমে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা এলার্জির লক্ষণ কমাতে সহায়ক।
অ্যান্টিহিস্টামিন ও অন্যান্য ওষুধ: অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ এলার্জির লক্ষণ কমাতে কার্যকর। এ ছাড়া চিকিৎসক স্টেরয়েড স্প্রে, ডিকনজেস্ট্যান্ট বা বিশেষ ওষুধ দিতে পারেন, যা শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত এলার্জির জন্য উপকারী।
ইমিউনোথেরাপি বা এলার্জি শট: দীর্ঘমেয়াদে এলার্জি কমাতে ইমিউনোথেরাপি বা এলার্জি শট কার্যকর হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে শরীরকে এলার্জেনের প্রতি সহনশীল করে তোলে। তবে এই চিকিৎসাটি কিছুটা সময়সাপেক্ষ এবং শুধুমাত্র গুরুতর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা: অনেকের জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি যেমন হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। তবে এগুলোর কার্যকারিতা ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে, তাই কোনো বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ: খাদ্যের মাধ্যমে অনেক সময় এলার্জির লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। হাইপোঅ্যালার্জেনিক খাদ্য গ্রহণ এবং যেসব খাবারে এলার্জি রয়েছে তা এড়িয়ে চলা উপকারী।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা যায়, যা এলার্জি প্রতিরোধে সহায়ক।
দীর্ঘমেয়াদে এলার্জি কমাতে কিছু প্রাকৃতিক উপায়:
- মধু: কাঁচা মধু পরাগজনিত এলার্জির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
- আদা ও হলুদ: এদের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন ও প্রদাহনাশক উপাদান, যা এলার্জির লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।
- গ্রিন টি: এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে ও এলার্জি প্রশমনে সহায়ক।
পরামর্শ:
এলার্জি সম্পূর্ণরূপে সারানো সম্ভব না হলেও নিয়মিত সঠিক যত্ন নিলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এর প্রভাবকে সীমিত রাখা যায়।